ঢাকাবুধবার , ২২ অক্টোবর ২০২৫
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আইসিটি
  6. আন্তর্জাতিক
  7. কৃষি
  8. খেলাধুলা
  9. গ্রাম-গঞ্জ-শহর
  10. চাকরি
  11. জাতীয়
  12. দৈনিক সমর দিগন্ত স্পেশাল
  13. ধর্ম ও ইসলাম
  14. প্রকৃতি ও পরিবেশ
  15. প্রবাস
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মুক্তাগাছায় স্বর্ণের লোভে গর্ভবতী স্ত্রীকে অস্বীকার, প্রবাসীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ

প্রতিবেদক
editor
অক্টোবর ২২, ২০২৫ ৬:০৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মুক্তাগাছা (ময়মনসিংহ):

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় স্বর্ণের লোভে গর্ভবতী স্ত্রীকে অস্বীকার করার অভিযোগ উঠেছে মালয়েশিয়া প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলীর বিরুদ্ধে। পরিবারে প্রতারণা, মারধর ও স্বর্ণ কেলেঙ্কারির অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার জান্নাত। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে দরবার গ্রাম্য সালিশ করলেও এর সমাধান দিতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরাও ব্যর্থ হয়েছে বলে জানা গেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়- শরীয়তপুরের নরিয়া উপজেলার গ্রামের মেয়ে নাসরিন আক্তার জান্নাত। বাবা নাসির মল্লিক মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরার দায়িত্ব নেয় মেয়ে জান্নাত। মা মমিনা বেগমের ধারদেনায় ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই জান্নাত পাড়ি জমান মালয়েশিয়ায়। বিদেশে গিয়ে পরিচয় হয় ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার বিরাশী গ্রামের প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলীর সঙ্গে। একে অপরকে ভালোবেসে ২০২৪ সালের ২৪ আগস্ট মালয়েশিয়ার বাতুক্যাব শহরের স্থানীয় এক মসজিদে তারা বিয়ে করেন।

বিয়ের পর কিছুদিন সুখে শান্তিতেই কাটছিল জান্নাত-জাহাঙ্গীরের দাম্পত্য জীবন। গর্ভবতী হলেও প্রথম সন্তান গর্ভেই মারা যায় চার মাসে। এরপরও দুজনের সংসারে অশান্তি আসেনি। ২০২৫ সালে আবারও গর্ভবতী হন জান্নাত। এবার সন্তান জন্মের আগেই দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। স্বামী জাহাঙ্গীর স্ত্রীকে দেশে পাঠানোর সময় দেন ১০০ গ্রাম স্বর্ণ। ১৫ আগস্ট জান্নাত স্বামীর বাড়ি মুক্তাগাছার তারাটি ইউনিয়নে পৌঁছান।
কিন্তু দেশে আসার কিছুদিন পরই বাঁধে বিপত্তি। জাহাঙ্গীর দাবি করেন, স্বর্ণ তাঁর বাবা আবু তাহেরের কাছে জমা আছে।

দুই মাস পর জানা যায়, যে ব্যক্তি স্বর্ণের প্রকৃত মালিক— সে মালপত্র না পেয়ে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে হাজির হয়। এ নিয়ে পারিবারিক বিরোধ চরমে ওঠে। ননদ তাসলিমার সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জান্নাতকে মারধর করা হয় এবং বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী জান্নাত অভিযোগ করেন,“স্বামী স্বর্ণের লোভে এখন গর্ভের সন্তানকেও অস্বীকার করছে। ননদ আমার পেটে লাথি মেরে আমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। স্বর্ণ তার বাবার কাছেই আছে।”

ঘটনার পর জান্নাত মুক্তাগাছা থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং তাকে পুনরায় স্বামীর বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

অভিযোগের ভিত্তিতে সাংবাদিকরা সরেজমিনে গেলে জাহাঙ্গীরের বাড়ির দরজা ছিল বন্ধ। তবে স্থানীয় কয়েকজন আত্মীয় জানান, “বউ ভালোই ছিলো, কিন্তু পারিবারিক দ্বন্দ্বে চলে গেছে। আমরা কিছু বললে পরে বিপদে পড়ব।”

স্থানীয় জ্যৈষ্ঠ বাসিন্দা আব্দুল  মোতালিব, আব্দুর রহিম, নয়ন আলী, আয়ুব আলী সহ প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন জানান, জাহাঙ্গীরের পরিবার এলাকায় কুখ্যাত। জমি দখল, আদম ব্যবসা,এবং প্রতারণার মতো নানা অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগের বিষয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে জাহাঙ্গীর প্রথমে স্বর্ণের ঘটনা অস্বীকার করেন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। কখনো নিজেকে সেনা কর্মকর্তা, কখনো সরকারি আমলাদের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করে হুমকি দেন। পরে ক্ষমা চেয়ে বলেন, “ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।”

তারাটি ইউনিয়নের সদস্য ইসলাম জানান,“বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিসের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু জাহাঙ্গীরের পরিবার সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে মেয়েটিকে বের করে দেয়। পরিবারটি আগে থেকেই নানা অপকর্মে জড়িত।”

মুক্তাগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রিপন চন্দ্র গোপ বলেন, “স্বর্ণের বিষয়ে কয়েকজন লোক প্রাইভেটকারে এসেছিলেন সহায়তা চাইতে। মেয়েটা আগে থেকেই পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে থানায় এসেছিল। সে মালয়েশিয়া প্রবাসী। তাদের বিয়ের কোনো সরকারি নিবন্ধন নেই, তবে তারা মসজিদে বিয়ে করেছেন বলে জানিয়েছে।”